'শ্রীমদ্ভাগবত গীতার প্রশ্ন ও উত্তর' যাত্রায় ডুব দিন : জ্ঞানের তালা খুলুন :
গীতার প্রশ্ন ও উত্তর |
ভগবদ্গীতার প্রশ্ন ও উত্তর যাত্রায় ডুব দিন ও আপনার জ্ঞানের তালা খুলুন। শ্রীমদ্ভাগবত গীতা হলো হিন্দুদের একটি মহান গ্রন্থ। তাই প্রতিনিয়ত গীতা সম্পর্কে নানান প্রশ্ন আমাদের মনের দরজায় উঁকি দেয়।এই মহান গ্রন্থ 'ভাগবত গীতা' সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে ইচ্ছে করে। তাই আজকের এই ব্লগটি- "গীতার প্রশ্ন উত্তর"আপনাদের জন্য লিখতে বসলাম।"গীতা বিষয়ক প্রশ্ন উত্তর " থেকে আপনাদের মনে জাগতে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। গীতা হল সেই জ্ঞান, যে জ্ঞান অর্জন করলে আপনাদের জীবনের জটিল সমস্যা ও তার সঠিক সমাধান এবং সুন্দরভাবে জীবন যাপনের একটা সঠিক রাস্তা ও উদ্দেশ্য জানতে পারবেন।
গীতা বিষয়ক প্রশ্ন উত্তর :
শ্রীমদ্ভাগবতগীতা হল সেই জ্ঞান, যে জ্ঞান অর্জন করলে আপনাদের জীবনের জটিল সমস্যা ও তার সঠিক সমাধান এবং সুন্দরভাবে জীবন যাপনের একটা সঠিক রাস্তা ও উদ্দেশ্য জানতে পারবেন। তাছাড়া ভাগবত গীতা মানবজাতির মহানত্ব, জীবনের প্রশ্ন, কর্ম ও যোগ্যতা, জীবনের উদ্দেশ্য, আত্মজ্ঞান, ঈশ্বরের প্রতি আত্মসমর্পণ এবং সাধারণ মানুষেকে সঠিক পথের নির্দেশ দেয়।তাই জ্ঞানের তালা খুলতে বা জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে আজকের এই গীতা বিষয়ক প্রশ্ন উত্তর পর্বটি অবশ্যই পড়ুন। প্রথমেই আমরা জেনে নিই এই ভাগবত গীতা কি?
১. ভাগবত গীতা কি?
উ: -ভাগবত গীতা হলো একটি পৌরাণিক গ্রন্থ। যদিও এটি মহাভারতের একটি অংশ, তবুও ভাগবত গীতা নিজস্ব একটি গ্রন্থ হিসাবে পরিচিত। মানবজাতির মহানত্ব, জীবনের প্রশ্ন, কর্ম ও যোগ্যতা, জীবনের উদ্দেশ্য, আত্মজ্ঞান, ঈশ্বরের প্রতি আত্মসমর্পণ এবং সাধারণ মানুষেকে সঠিক পথের নির্দেশ দেয়। এটা বলা যেতে পারে যে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুনের একটি বিশেষ কথোপকথনের পর্বটি হচ্ছে ভাগবত গীতা।
২. মহান গ্রন্থ ভগবদ্গীতা কে রচনা করেন?
ভগবদ্গীতা হল মহাভারতের বিশেষ একটি অংশ।এটি রচনা করেন ঋষি ব্যাসদেব । যার পুরো নাম ছিল কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন, যাকে বেদ-ব্যাসও বলা হয়।
৩. সংস্কৃত ভাষায় গীতা শব্দের অর্থ কি?
ভগবানের গান।
৪. ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতার জ্ঞান প্রথম কাকে দিয়েছিলেন?
সূর্যদেব বিবস্বানকে।
৫. সূর্যদেব পরে এই জ্ঞান কাকে দিয়েছিলেন?
সূর্যদেব পরে মানবজাতির জনক মনুকে দিয়েছিলেন।
৬. ভগবদ্গীতা সম্পর্কে মানুষ কি বলে?
যারা গীতার উপর ধ্যান করে বা কিতাব পাঠ করেন তারা প্রতিদিন তা থেকে নতুন আনন্দ এবং নতুন অর্থ লাভ করবে৷ শ্রী অরবিন্দের মতে, "ভগবদ-গীতা মানব জাতির একটি সত্যিকারের ধর্মগ্রন্থ। এটি কোন বই নয় এটি একটি জীবন্ত সৃষ্টি। যার মধ্যে একটি নতুন বার্তা রয়েছে৷ প্রতিটি যুগ এবং প্রতিটি সভ্যতার জন্য একটি নতুন বার্তা বা অর্থ।
৭. ভগবদ্গীতা কি এবং এর কাহিনী কি প্রতিনিধিত্ব করে?
ভাগবত গীতা অধ্যায়ন করলে এটাই বোঝা যায় যে আমরা কীভাবে আমাদের সমস্ত বাধা-বিপত্তি ও আত্ম-সন্দেহ কাটিয়ে উঠতে পারি এবং শেষ পর্যন্ত সত্য ও ন্যায়ের পথে জীবনযাপন করতে পারি। ভগবদ্গীতা সম্পূর্ণরূপে প্রতিনিধিত্বমূলক এবং অত্যন্ত প্রতীকী। পুরো পাঠ্যটি আমাদের মনের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে তার একটি উপস্থাপনা।
৮. ভগবদ্গীতায় পাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধারণাগুলির মধ্যে একটি কি?
আমাদের আত্মা অমর। জন্মের আগে বিদ্যমান ছিল এবং মৃত্যুর পরেও বিদ্যমান। এই বোঝাপড়ার উপর উপনিষদে জোর দেওয়া হয়েছে এবং পুরো গীতা জুড়ে নাটকীয়ভাবে চিত্রিত করা হয়েছে তা হল যা বাস্তব সত্যের দিকে রয়েছে বা যা সত্য বলে মনে হয় তার বাইরে যাওয়ার গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
৯. ভাগবত গীতায় কয়টি অধ্যায় আছে?
শ্রীমদ্ভাগবত গীতায় মোট ১৮ টি অধ্যায় আছে।
১০. ভগবদ্গীতার অন্যতম প্রধান পাঠ কী?
কাম, লোভ এবং ক্রোধ এই তিনটি রিপু হল একজন মানুষের পতনের কারণ এবং আত্ম-ধ্বংসের প্রবেশদ্বার। এগুলোই কার্যত মানুষের জীবনের প্রতিটি সমস্যার মূল কারণ। যদি একজন ব্যক্তি লম্পট, লোভী এবং ক্রুদ্ধ থাকে, তবে তাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
অবশ্যই পড়ুন - ভাগব্গীতার উক্তি ও গীতার মহান বাণী
১১. আলবার্ট আইনস্টাইন কি ভগবদ গীতার কথা বলেছিলেন?
অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন যখন আমি ভগবদ্গীতা পড়ি এবং তারপর ঈশ্বর কীভাবে এই মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন সে সম্পর্কে চিন্তা করলে বাকি সবকিছুই অপ্রয়োজনীয় মনে হয়।
১২.সহজ কথায় ভগবদ্গীতা কি?
ভগবদ্গীতার অর্থ "প্রভুর গান", যার বর্ণনায় কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলির মধ্যে একটি যা ভগবান কৃষ্ণকে নির্দেশ করে৷
গীতা সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন :
১৩. মানবজাতির জনক মনু এই গীতার জ্ঞান কাকে দিয়েছিলেন?
ইক্ষাকুকে দিয়েছিলেন।
১৪. মহাভারতের কোন অংশে গীতার জ্ঞান আছে?
ভীষ্ম পর্বের ২৫ থেকে ৪২ অধ্যায়ে।
১৫. ভগবদ্গীতার অর্থ ও নৈতিকতা কী?
ভগবদ্গীতার বার্তাটি হল যে হয় আপনি আপনার ক্রিয়াগুলি সংযুক্তি সহকারে সম্পাদন করতে পারেন যে আপনিই কর্তা অথবা আপনি ঈশ্বর/প্রকৃতি কর্ম সম্পাদন করছেন এই চিন্তা করে সংযুক্তি ছাড়াই একই কাজ করতে পারেন।
১৬. শ্রীমদ্ভগবত গীতাকে সপ্তশতী বলা হয় কেন?
শ্রীমৎ ভাগবত গীতায় ৭০০ শ্লোক আছে বলে।
১৭. ভাগবত গীতা কোন ছন্দে রচিত?
অনুষ্টুপ ছন্দে রচিত।
১৮. ভাগবত গীতার ৫টি নীতি কি কি?
ভগবদ্ গীতার সারমর্মটি এই পাঁচটি প্রধান বিষয় – ঈশ্বর (ঈশ্বর), জীব (জীব সত্তা), প্রকৃতি (বস্তুগত প্রকৃতি), কাল (সময়) এবং কর্ম সম্পর্কে জানার মাধ্যমে ভালভাবে বোঝা যায়।
১৯. গীতার মোট কতগুলি নাম আছে?
ভাগবত গীতার 18 টি নাম আছে যথা - গঙ্গা, গীতা, সীতা , সাবিত্রী, প্রতিব্রতা, সত্যা, ব্রহ্মাবলি, ব্রহ্মবিদ্যা, ত্রিসন্ধ্যা, মুক্তগহিনী, অর্ধমাত্রা, চিতানন্দা, বেদত্রয়ী, ভ্রান্তিনাশিনী, ভবগ্নি, পরানন্দা, তও্বার্থ, জ্ঞানমঞ্জুরী।
২০. ভগবদ্গীতার ৫ টি প্রধান বিষয় কি কি?
ভগবদ্গীতার পাঁচটি প্রধান বিষয় হলো -
ঈশ্বর - পরম প্রভু।
জীব - জীবন্ত সত্তা।
প্রকৃতি - বস্তুগত প্রকৃতি।
কালা - চিরন্তন সময়।
কর্ম - ক্রিয়াকলাপ।
২১. গীতার কর্ম ষটক কাকে বলে?
গীতার ১ থেকে ৬ অধ্যায় কে কর্ম ষটক বলে।
২২. গীতার ভক্তি ষটক কাকে বলে?
গীতার ৭ থেকে ১২ অধ্যায় কে ভক্তি ষটক বলে।
২৩. গীতার জ্ঞান ষটক কাকে বলে?
গীতার ১৩ থেকে ১৮ অধ্যায় কে জ্ঞান ষটক বলে।
২৪. ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথাই পঞ্চ ভূত কি?
ভগবত গীতায়, যা হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতের একটি অংশ। ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনের সাথে কথোপ কথনের সময় প্রকৃতির সাথে আমাদের যে সংযোগ রয়েছে তা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি পাঁচটি অপরিহার্য উপাদানের কথা বলেছিলেন – মহাকাশ (আকাশ), বায়ু (বায়ু), অগ্নি (অগ্নি), জল (জল) এবং পৃথিবী (ভূমি বা পৃথ্বী) –বা আমরা ক্ষীতি,অপ,তেজ মরুত,ব্যোম বলে জানি। যা এই পৃথিবী
২৫. ভগবদ্গীতার তিনটি প্রধান বিষয় কী কী?
- বিচ্ছিন্নতা এবং ধর্ম।
- কৃষ্ণ, পরম, এবং মানব জ্ঞান।
- পুনর্জন্ম এবং আত্মা।
২৬.ভগবদ্গীতার তিনটি শিক্ষা কী কী?
সন্দেহ করবেন না, সর্বদা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আপনার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। যা ঘটবে ভালোর জন্যই ঘটবে।
২৭. ভগবদ্গীতা মধ্যে তিনটি গুণ কি কি বলা হয়েছে?
ভগবদ্গীতায়, ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে তিনটি গুণের কথা বলেছেন — সত্ত্ব, রজঃ এবং তমঃ
২৮. গান্ধী ভগবত গীতা সম্পর্কে কি বলেছিলেন?
গান্ধী বলেছিলেন, "আমার নিজের জীবনে গীতার শিক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োগ করার জন্য ৪০বছর অবিরাম চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি সম্পূর্ণ নম্রতার সাথে বলছি যে - সত্য এবং অহিংসার প্রতিটি পথ নিখুঁতভাবে পালন করা ছাড়া নিখুঁত ত্যাগ অসম্ভব"।
২৯.ভগবদ্গীতা কি সত্য?
গীতার কালজয়ী ও সর্বজনীন বাণী সত্যের প্রকাশে সর্বব্যাপী বিরাজ করছে। ভগবদ্গীতা মানে "আত্মার গান", মানুষ এবং তার সৃষ্টিকর্তার মধ্যে সত্য-উপলব্ধির ঐশ্বরিক যোগাযোগ, আত্মার মাধ্যমে আত্মার শিক্ষা, যা অবিরাম গাওয়া উচিত।
৩০. ভগবদ্গীতা অনুসারে কে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন?
ভগবদ্গীতা ঘোষণা করে যে ভগবানের পরম ব্যক্তিত্ব হল কৃষ্ণ। যিনি এই মহাবিশ্ব এবং এর বাইরের আধ্যাত্মিক জগত উভয়েরই স্রষ্টা।শুধুমাত্র তাঁর করুণা দ্বারা বোঝা যায়, যখন তিনি তাঁর বিশ্বস্ত ভক্তদের কাছে নিজেকে প্রকাশ করতে পেরে খুশি হন।
৩১. ভগবদ্গীতায় সর্বোচ্চ দেবতা কে?
ভগবান কৃষ্ণ।
৩২. ভগবদ্গীতায় অন্ধ কে?
রাজা ধৃতরাষ্ট্র অন্ধ ছিলেন। তার একশত দুষ্ট পুত্র ছিল। তারা তার ভাইয়ের পুত্র পাণ্ডবদের প্রতি শত্রুতা ছিল। শৈশব থেকেই কৌরবরা, অর্থাৎ ধৃতরাষ্ট্রের ছেলেরা, পাণ্ডবদের ঘৃণা করত।
৩৩. ভগবদ্গীতার আসল নায়ক কে?
মহাভারত যুদ্ধে, অর্জুন পাণ্ডব পক্ষের একজন প্রধান যোদ্ধা ছিলেন। এবং তার নিজের বড় ভাই কর্ণ এবং তার পিতামহ ভীষ্ম সহ অনেক যোদ্ধাকে হত্যা করেছিলেন। যুদ্ধ শুরুর আগে, তার পরামর্শদাতা, কৃষ্ণ, তার নৈতিক দ্বিধাগুলি কাটিয়ে উঠতে তাকে ভগবদ্গীতার সর্বোচ্চ জ্ঞান দিয়েছিলেন।
৩৪. ভগবদ্গীতা কি জীবন পরিবর্তন করতে পারে?
হ্যাঁ অবশ্যই। আমি আগের চেয়ে অনেক বেশি বিনয়ী হয়েছি এবং রাগ, লোভ, অভিমান, হিংসা ইত্যাদিও কিছুটা কমেছে। পেশাগতভাবে আমি জাগতিক জিনিসের জন্য আরও স্থিতিশীল এবং কম লোভী হয়েছি।
৩৫. ভগবদ্গীতায় কোন শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয়েছে?
সাধারণ শব্দগুলির তালিকা অনুসন্ধান করার পরে সামগ্রিকভাবে বইটিতে ৯,৮৩৯ টি শব্দ রয়েছে সাধারণ শব্দ সহ এতে ২০,৮২৬ টি রয়েছে । যার মধ্যে সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহৃত শব্দটি হল “অর্জুন”। ১৭৫ বার প্রদর্শিত হয়েছে।
৩৬. ভগবদ্গীতায় কি বিজ্ঞান আছে?
প্রাচীন ভারতের ধর্মগ্রন্থগুলি অসাধারণ বৈজ্ঞানিক ধারণার সাথে লেখা। ভগবদ্গীতা সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বার অধ্যয়ন, বিশ্লেষণ এবং ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
পৃথিবী, জল, অগ্নি, বায়ু, আকাশ, মন, বুদ্ধি এবং অহং - এই আটটি মিলে পৃথিবীর জড় শক্তি গঠিত।
৩৭. আমরা কি পিরিয়ডের সময় গীতা পড়তে পারি?
হ্যাঁ। আপনি মাসিকের সময় বা মাসিক চক্রের সময় ভগবদ্গীতা পড়তে পারেন। ভগবদ্গীতা শেখায় কিভাবে জীবন যাপন করতে হয়। এটা আমাদের বাস্তবতা শেখায়। সুতরাং, পিরিয়ডের সময় পড়লে কোন ক্ষতি নেই।
৩৮.কীভাবে গীতাকে জীবনে প্রয়োগ করবেন?
১. আপনার মনটা আপনার কাজের উপর ফোকাস করুন।ফলাফলের উপর নয়। “কর্মণ্য অধিকারাস তে।
২. স্থূল হও।
৩. সহানুভূতি গড়ে তুলুন।
৪. পরিতৃপ্তি হতে দেবেন না।
৩৯. কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৃষ্ণ অর্জুনকে কি উপদেশ দিয়েছিলেন?
ভগবান কৃষ্ণ অর্জুনকে যোদ্ধা হিসাবে তার কর্তব্যের কথা মনে করিয়ে দেন।
বলেছিলেন আপনি যদি এই ধার্ম যুদ্ধ না করেন, তবে আপনি আপনার দায়িত্বে ও কর্তব্যে ব্যর্থ হবেন। আপনার সুনাম হারাবেন এবং পাপ করবেন। লোকেরা চিরকাল তোমার ব্যর্থতার কথা বলবে। একজন সম্মানিত ব্যক্তির কাছে অসম্মান হল মৃত্যুর চেয়েও খারাপ।
৪০.কৃষ্ণভাবনার ৪ টি নীতি কি কি?
কৃষ্ণভাবনার প্রথম ধাপ হল চারটি নিয়ন্ত্রক নীতি অনুসরণ করা। চারটি নিয়ন্ত্রক নীতি হল কোন অবৈধ যৌনতা, কোন নেশা, কোন মাংস খাওয়া এবং কোন জুয়া খেলা নিষিদ্ধ।
৪১. বর্তমান যুগে গীতার মূল্য কতখানি?
গীতা আমাদের ইন্দ্রিয়গুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে, আমাদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে সাহায্য করে। গীতা ৫০০০ বছর আগের মতই অন্তর্দৃষ্টিতে আজকেও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক।
২. গীতার ২৬ টি গুণ কী কী?
নির্ভীকতা, হৃদয়ের পবিত্রতা, জ্ঞান অর্জনে এবং যোগ অনুশীলনে অধ্যবসায়, দান, ইন্দ্রিয়ের অধীনতা, পবিত্র আচার সম্পাদন, ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়ন, আত্ম-শৃঙ্খলা, সরলতা, আঘাতহীনতা, সত্যবাদিতা, ক্রোধ থেকে মুক্তি, ত্যাগ, শান্তি, অপবাদ, সমবেদনা।
৪৩. ভগবদ্গীতার ৭ ৭ কি?
আল্লাহর সমকক্ষ আর কিছু নেই এবং তাঁর থেকে শ্রেষ্ঠ কিছু নেই। “শ্রী কৃষ্ণ হলেন পরমেশ্বর ভগবান, যিনি চিরন্তন, সর্বজ্ঞ এবং অসীম আনন্দময়। তিনি আদি ও অন্তহীন, সকলের উৎপত্তি এবং সকল কারণের কারণ।"
৪৪. ভাগবত গীতায় কয়টি শ্লোক আছে?
ভাগবত গীতায় মোট ৭০০ টি শ্লোক আছে।
৪৫. শ্রীমৎ ভাগবত গীতায় কয়টি যোগের কথা বলা হয়েছে?
তিনটি যোগের কথা বলা হয়েছে যথা -ভক্তিযোগ, জ্ঞানযোগ ও কর্মযোগ।
৪৬. মহাভারতের অপর নাম কি?
শতসহস্র সংহিতা।
৪৭. ভাগবত গীতা কোন শ্রেণীর ধর্মগ্রন্থ?
ভাগবত গীতা হল উপনিষদ ইহা দর্শন শ্রেণীর ধর্মগ্রন্থ।
৪৮. গীতার প্রথম অধ্যায়ের নাম কি?
অর্জুন বিষাদ যোগ।
৪৯. জ্ঞানী মানুষের কর্ম কি?
কর্মফলের আশা না করে অনাসক্ত ভাবে কর্ম করা।
৫০. গীতায় 20টি মূল্যবোধ কি কি?
একটি সুখী এবং শান্তিময় জীবনের জন্য ভগবদ্গীতা থেকে বিশটি মূল্যবোধ
অমনিত্বম - নম্রতা।
আদমভূতম্ - অহংকার।
অহিংসা - অহিংসা।
ক্ষান্তি - সহনশীলতা।
আর্যভ্রাম - সরলতা।
আচার্যোপাসনম - শিক্ষকের সেবা।
সাউকাম - পরিচ্ছন্নতা (অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক)।
স্থৈর্যম - অবিচলতা।
আত্মা নিয়ন্ত্রণম - আত্মনিয়ন্ত্রণ।
বৈরাগ্যম – ত্যাগ।
অহংকার - অহংকার অনুপস্থিতি।
জন্মমৃত্যু, জরাব্যধি, দুখ, দুর্দশা অনুদর্শনম - জীবন-মৃত্যু, বার্ধক্য-রোগ যন্ত্রনার প্রতিফলন।
অসক্তি - অনাসক্তি।
অনাবিশ্বং পুত্রদারাগৃহদিষু - পুত্র ও স্ত্রীর প্রতি বিচ্ছিন্নতা।
নিত্যম্ সমচিত্তত্বম্ ইস্তানিস্তোপাত্তিশু - সুখকর এবং অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্যে সমতা।
মায়ি চ অনন্যযোগেন ভক্তিঃ অব্যভিচারিণী - ঈশ্বরের প্রতি অবিচল ও অখণ্ড ভক্তি।
বিবিকতা দেশ সেবাম - একাকী জীবনের জন্য ভালবাসা।
আরতির জনসংসাদী - মানুষের সঙ্গের প্রতি বিচ্ছিন্নতা।
অধ্যাত্মজ্ঞান নিত্যত্বম - আত্ম-উপলব্ধির গুরুত্ব বোঝা।
তত্ত্বজানার্থ দর্শনম - চূড়ান্ত সত্যের দার্শনিক অনুসন্ধান।
অবশ্যই পড়ুন - বেদান্ত দর্শন
উপসংহার :
গীতা মানব সমাজের প্রাথমিক দার্শনিক দৃষ্টি বলা হয়েছে যা জীবনের অদ্ভুত প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজে দেয়। এটি নির্দেশ দেয় যে সমস্ত মানুষ তার স্বভাবসম্পর্কে সঠিক জ্ঞান প্রাপ্ত করতে হবে এবং তার নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য পূর্ণ করতে হবে।
সাধারণত ভাগবত গীতা মানবিক জীবনের নানান জটিল প্রশ্নগুলির সমাধান এবং জীবনের উদ্দেশ্য নির্ধারণে সহায়তা করে। এটি অন্যতম একটি মহান ধর্মীয় গ্রন্থ যা মানবিক সম্পর্ক ও মর্যাদার উপর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রচিত হয়েছে। গীতায় ব্যাখ্যানের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার জীবনের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারে এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ জীবন প্রাপ্ত করতে পারে।
ধন্যবাদ প্রিয় পাঠকগণ
0 মন্তব্যসমূহ