হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার-হিন্দু রীতি ও তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

 

হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার-হিন্দু রীতি ও তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার


গোমূত্র পবিত্র কেন?

হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার অনুযায়ী গরুকে মাতা বলে গণ্য করা হয়। গো শুচি অর্থাৎ পবিত্র।  গোমূত্র অত্যন্ত পবিত্র কারণ গোমুত পারদ এবং গন্ধকের তাত্বিক গুন প্রচুর মাত্রায় পাওয়া যায়। গোমূত্র সেবনে পলীহা ও যকৃতের রোগ নষ্ট হয়ে যায়। গোমূত্র ক্যান্সারের মতো ভয়ানক রোগের পক্ষেও সহায়ক। সংক্রমণ থেকে উৎপন্ন রোগও ঠিক হয়ে যায়।এইভাবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টি থেকেও এটা পবিত্র।


গঙ্গাজলকে অতি পবিত্র বলা হয় কেন? 

হিন্দু রীতি অনুসারে গঙ্গাকে দেবতাদের নদী বলা হয়। পাহাড়, পর্বত ও পাথরের মধ্য দিয়ে বহে আসে বলে এর জল লবণাক্ত।তাই গঙ্গার জলে কোন পোকা হয় না। এর উৎপত্তিস্থল গোমুখ যার কারনে এর জল পবিত্র।


সধবা স্ত্রী সিঁথিতে সিঁদুর পরে কেন?

হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার অনুসারে সীমন্ত অর্থাৎ সিঁথিতে সিঁদুর পরা সধবা স্ত্রীর লক্ষণ। হিন্দুদের মধ্যে বিবাহিত স্ত্রীরা সিঁথিতে সিঁদুর পরেন।কুমারী কন্যা এবং বিধবা স্ত্রীরা সিঁদুর পরেন না। এছাড়াও সিঁদুর পরলে স্ত্রী সৌন্দর্যের বিকাশ ঘটে। অর্থাৎ তাদের সুন্দর দেখায়। বিবাহের সময় বর-বধূর স্মৃতিতে মন্ত্র উচ্চারণ এর মধ্য দিয়ে  সিঁদুর পরান।তারপরেই বিবাহ সম্পন্ন হয়।সেইদিন থেকে স্ত্রী নিজের পতির দীর্ঘায়ু কামনা করে প্রতিদিন সিঁথিতে সিঁদুর পরেন। সিঁথিতে সিঁদুর স্ত্রী-শৃঙ্গারের একটি মুখ্য অঙ্গ।


রজস্বলা স্ত্রীকে অচ্ছুত বলা হয় কেন?

অচ্ছুত বা অস্পৃশ্য যাচ্ছো কথাটির অর্থ যা ছোঁয়ার অযোগ্য। রজস্বলা স্ত্রীর হাতে জলপান করাওকে অপবিত্র মনে করা হয়।কারণ এর স্পর্শে জল সংক্রমিত হওয়ার ভয় থাকে।রজ গন্ধযুক্ত হয়। যার কারণে স্বচ্ছ বস্তু সংক্রমিত হয়ে যায়।কিন্তু বেশিরভাগ লোকেই একে কুসংস্কার বলে মনে করেন যেখানে এই তথ্য বৈজ্ঞানিকরাও স্বীকার করেন। রজস্বলা স্ত্রীর স্পর্শে আচার খারাপ হয়ে যায়, তুলসীপাতা ঝিমিয়ে পড়ে। উপরোক্ত কারণে রজস্বলা স্ত্রীকে অস্পৃশ্য মনে করা হয়।


লক্ষ্মীকে চঞ্চলা বলা হয় কেন? 

চঞ্চলা অর্থাৎ যার মন চঞ্চল। লক্ষীকে চঞ্চলা বলার অর্থ লক্ষী এক জায়গায় থাকেন না। টাকা পয়সার কথাই ধরা যাক - আজ যে টাকা আমার কাছে আছে কালকে তা অন্যের জনের কাছে যেতে পারে।আবার পরশু আরেকজনের হাতে যেতে পারে তাই লক্ষীকে চঞ্চলা বলা হয়।


তুলসী গাছ বাড়ির উঠোনে লাগানো হয় কেন?

হিন্দু রীতি অনুসারে তুলসী গাছ হচ্ছে,হিন্দু পরিবারের পরিচয় এবং সাথে সাথে ধার্মিকতা এবং তাত্ত্বিক ভাবনার পরিচয় দেয়। হিন্দু স্ত্রীরা তুলসী পূজা নিজের সৌভাগ্য এবং বংশবৃদ্ধির কামনাতে করেন। রামায়নে বর্ণিত প্রসঙ্গ অনুযায়ী রাম-দূত হনুমান সীতার খোঁজে যখন সমুদ্র লংঘন করে লঙ্কা যান তখন সেখানে তিনি একটি ঘরের উঠোনে তুলসী গাছ দেখেন।সেটা বিভীষণের ঘর ছিল। এখানে একটা তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো সেই প্রাচীনকাল থেকেই তুলসীর পূজা হয়ে আসছে। বৈজ্ঞানিকদের মতে তুলসী পাতার সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করার অদ্ভুত শক্তি নিহিত আছে। তুলসী একটি দিব্য ঔষধি বৃক্ষ।এর পাতা জলে সেদ্ধ করে সেই জল পান করলে সর্দি কাশি এবং ম্যালেরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তুলসী ক্যান্সার নামক ভয়ানক রোগ সারাতেও সাহায্য করে। অনেক ঔষধিয় গুন থাকার জন্য এর পূজা করা হয়।


ব্রাহ্মণেরা পৈতা কানে জড়াই কেন?

লঘুশংকা বা দীর্ঘশংকার সময় পৈতা যাতে অপবিত্র না হয় তাই টেনে কানে জড়ানো হয়। দ্বিতীয় কারণ কানে পৈতা জড়ানো দেখে লোকে বুঝতে পারবে যে লোকটা লঘুশংকা বা দীর্ঘশংকা থেকে এসেছে এখনো হাত পা ধোয় নি।

আর এর বৈজ্ঞানিক কারণ হলো ডানকানের এক বিশেষ নাড়ী আয়ুর্বেদে যার নাম লোহি, সেটা চাপালে পূর্ণ সুস্থ লোকের খুব সহজে প্রস্রাব হয়ে যায়।কেন এমন হয়? কারণ ওই নাড়ীর অন্ডকোষের সাথে সরাসরি সম্পর্ক আছে।হিরণিয়া নামক রোগের বিধান হিসেবে ডাক্তাররা ডানকানের ওই নাড়ীর শল্যচিকিৎসা করেন।তাই কানে পৈতা জড়ালে মূত্রের শেষ বিন্দু পর্যন্ত শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।


মহা শিবরাত্রির উৎসব পালন করা হয় কেন?

হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার অনুসারে শিবরাত্রি হলো ভগবান শিবের রাত্রি।পৌরাণিক মতে এই তিথিতে ভগবান শিবের সাথে পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল।এটা ভগবান শিবের আরাধনার রাত্রি যা ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থীতে পালন করা হয়। অন্য দেবতার পূজা যখন দিনের বেলা হয় তখন শিবের পূজা রাতে হয় কেন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে।ভগবান শিব তমোগুণ সম্পন্ন। সুতরাং তমোময় রাত্রি শিবের পছন্দ। রাত্রি সংহারকালে প্রতিনিধিত্ব করে। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থীতে চাঁদ সম্পূর্ণরূপে ক্ষীন  থাকে।জীবের ভিতরে তামসী প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায়।যেমন জল আসার আগে বাঁধ দিতে হয় সেইরূপ চন্দ্রের ক্ষয় আসার আগে ঐ তামসী প্রবৃত্তি নিবারণের জন্য ভগবান আশুতোষের আরাধনা শাস্ত্রকার বিধান দিয়েছেন। সংহারের পর নতুন সৃষ্টি অনিবার্য। আপনারা দেখেছেন ফাগুন মাসে গাছের সব পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতা গজায়।এটা সৃষ্টির নতুন রূপ।


কালীপুজোর রাতে বাজি পোড়ানো হয় কেন?

কালী পূজা হয় কার্তিক মাসে।সেই সময় নানা ধরনের পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গের ও নানা ধরনের সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়।তারা যাতে কোন ক্ষতি করতে না পারে তাই ধুমধাম করে বাজি পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয় বা তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে এর  পৌরাণিক দিক  বিবেচনা করলে জানা যায় যে চৌদ্দ বছর বনবাসের পর যখন রাম সীতা লক্ষণ অযোধ্যায় ফিরে আসে তখন অযোধ্যাবাসী ধূমধাম করে বাজি পুড়িয়ে তাদেরকে সম্বর্ধনা জানিয়েছিলেন।এই দিনটি ছিল অমাবস্যার যোগ তাই সেই হতে কালীপূজায় বাজি পোড়ানোর বিশাল আয়োজন হয়।


'গীতা, দান পূর্ণ কাজ কেন?

হিন্দু ধর্মীয় সংস্কার অনুসারে 'গীতা' দান করাকে আজও পর্যন্ত সমাজে একটি পূণ্য কাজ বলে মানা হয়ে থাকে। কারণ গীতা হল হিন্দুদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ। তাছাড়া সকল ধর্মের লোক এই গ্রন্থেকে সম্মান দেয়। এই গ্রন্থ পাঠ করলে মনে বৈরাগ্য ভাব যুক্ত হয়।ফলে মানুষ নিষ্কাম জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ হয়। তাই গীতা দান পুণ্যের কাজ। গীতা পাঠের মাধ্যমে মানুষ যদি সদ্ভাবে জীবন-যাপন করতে সক্ষম হয় তার চেয়ে আর বড় কাজ পৃথিবীতে কিছু নেই।তাই 'গীতা'গ্রন্থ দান করার পিছনে পবিত্র কর্তব্যের যুক্তি যুক্ত।


সন্ন্যাসীরা পায়ে খড়ম দেন কেন?

অতি প্রাচীনকাল থেকে মুনি-ঋষিরা খড়ম ব্যবহার করে আসছেন। আজ আমরা বিজ্ঞানের যুগে দাঁড়িয়ে এর কারণ খুঁজে পায়না কিন্তু একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে দেখা যাবে সন্ন্যাসীদের জীবন যাযাবরের মতো। তারা এখানে সেখানে মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ায়। চামড়ার জুতো তাড়াতাড়ি ছিঁড়ে যায় কিন্তু কাঠের জুতো তাড়াতাড়ি ছেঁড়ে না। জলে ভেজানো যায় তাছাড়া এই কাঠের জুতো বেশিক্ষণ থাকলে কোন ক্ষতি হয় না কারণ এতে কোন রোগ জীবাণু আটকে থাকে না এই সকল কারণে সাধু-সন্ন্যাসীরা খড়ম পরে থাকেন।


দিনের বেলায় প্যাঁচার ডাক অমঙ্গল কেন? 

পাখিদের মাত্র একমাত্র পেচাই নিশাচর প্রাণী।তাদের পরিচয় অসূর্যস্পর্শা নারীর মতো।কারণ সূর্যালোক থাকাকালীন অর্থাৎ দিনের বেলা এদের দেখতে পাওয়া যায় না সেই সময় এদের ডাক বা ক্রন্দন নাকি বিপদের আশঙ্কা করে। কোন প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় আরম্ভ হওয়ার পূর্বে সকল প্রাণীর মধ্যে কুকুর ও পেঁচা আগে অনুভব করতে পারে। তাই পেঁচারা  ডাকতে থাকে।তাদের অস্বাভাবিক ভাব দর্শন করে মানুষ তথা অন্যান্য প্রাণীরা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে উদ্যত হয়।অতএব ব্যাপারটি যুক্তিযুক্ত একেবারেই ফেলে দেওয়ার মতন নয়।


দোল উৎসবে আবির মাখতে হয় কেন?

দোল উৎসবে আবির খেলা ও মাখা হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব। দোল হয় ফাগুন মাসে ফাগুন।শীতের আবহাওয়া শেষে গরমের আবহাওয়া যখন শুরু হয় তখন আমাদের ত্বকের উপর বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণ হয়।আবির এইসব জীবাণু কে বিনষ্ট করে। আর দোলে ব্যবহারের জন্য যে আবির তৈরি হয় তা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে।তাই আবির মাখা বিশেষ উপকার বলে প্রথাটি বিজ্ঞানসম্মত।


হাঁড়ির তলায় মাটি লেপা হয় কেন?

হাড়ির তলায় মাটি লেপলে তল মসৃণ থাকে না। হাড়ির তলা অমসৃণ থাকলে হাড়ি বেশি তাপকে আকর্ষণ করে এবং হাড়ি তাড়াতাড়ি  উত্তপ্ত হয়। এর ফলে রন্ধন কার্য তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হয়।সেই কারণে হাঁড়ির তল মসৃণ থাকলে তাতে মাটি লেপে অমসৃণ করা হয়। এই প্রথাটি অবশ্যই যুক্তিযুক্ত এগুলি বেশিরভাগ পাড়াগাঁয়ে মানা হয়।


গায়ে টিকটিকি পড়লে শুভ কেন?

গায়ে টিকটিকি পড়লে শুভ বলা হয় কারণ পূর্বে খনা নামক একজন সত্যবাদী মহিলা ছিলেন। উনি জ্যোতিষ গণনা পূর্বক যাহা বলিতেন তাহা অতীব সত্য ফলিত।তাহার শ্বশুর খনা দেবির জীভ কেটে দেন। আর সেই জীভ একটি টিকটিকি ভক্ষণ করার জন্যই টিকটিকির টিকটিক শব্দ শুনলে অনুভব করিয়া থাকি কথাটি সত্য।সেজন্য টিকটিকি গায়ে পড়লে শুভ বলা হয়।


গণিকালয়ের মাটির না হলে দুর্গা প্রতিমা হয় না কেন?

এই প্রবাদটির পিছনে বৈজ্ঞানিক কোন কারণ না থাকলেও পৌরাণিক একটা কারণ আছে। তাছাড়া গণিকারা যে একেবারে অছ্যুৎ নয় সেটাকে প্রমাণ করার জন্য দেবী দুর্গাকে কেন্দ্র করে প্রথা প্রচলিত হয়েছে। কারণ নারী মাত্রই মা দুর্গার বংশজাত আর পুরাণে যে ঘটনা শোনা যায় সেটা হলো শিবের কুচনী পাড়া যাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। একদা শিব গণিকালয়ে গমন করেছেন শুনে দূর্গা মাতা তাকে ছল করার জন্য গণিকার বেশ ধারণ করে সেখানে শিবের যাওয়ার আগে স্বাভাবিক ভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন গণিকার মত সুন্দরী সেজে। যথারীতি শিব সবচেয়ে সুন্দরী গনিকা ভেবে দুর্গার কাছে গেলেন আলাপ-আলোচনার পর দুর্গা তাকে তিনবার ঝাঁটা মেরে ঘরের বাইরে পাঠিয়ে দেন। তখন শিব অভিশাপ দিলেন আমার মত যারা গণিকালয়ে আসবে তারাও আমার মতে এভাবে ঝাঁটার আঘাত পাবে। শোনা যায় এই প্রথাটি গণিকালয়ে আজও প্রচলন আছে। কোন পুরুষ প্রস্থান করলে তাকে না মেরে দুয়ারে তিনবার ঝাঁটার আঘাত করা হয়।

তারপর শিবের অভিশাপ শুনেই গণিকালয়ে দুর্গা নিজের রূপ ধারণকরলেন। তখন শিব লজ্জায় আর থাকতে না পেরে নিজেকে জাহির করার জন্য বললেন এই গণিকালয়ের মাটি না হলে তোমার মৃণ্ময়ী মূর্তিকে কেউ পূজা করবে না। আর করলেও তার কোনো সুফল হবে না।তাই শিবের বাক্য মা দুর্গা ও ভক্তগণকে মেনে নিতে হল।সেই থেকে এই প্রথা প্রচলিত আছে।


মেয়েদের পেটে কথা থাকে না কেন?

এটা মহাভারতের কাহিনী থেকে প্রচারিত হয়েছে। কুন্তির প্রথম পুত্র সূর্যের বরে হয়েছিল,তার নাম কর্ণ।একথা তিনি কোনদিন তার পঞ্চপুত্রদের কাছে বলেননি। যখন কুরু-পাণ্ডবের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয় তখন কর্ণ ছিল কৌরবদের পক্ষে। কুন্তি আর সহ্য করতে না পেরে পুত্রদের কাছে বলেছিলেন কর্ণ হচ্ছে তোদের ভাই।তাই শুনে যুধিষ্ঠিরের  শরীরের পক্ষে আর কর্ণকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলো না। তাই যুধিষ্টির সেদিন মাকে বলেছিলেন আজ  আমি বলছি যে আজ হতে আর কোন মেয়ের পেটে কথা থাকবে না। যুধিষ্টিরের কথায় সত্যি আর মেয়েদের পেটে কথা চাপা থাকে না। তারা সত্যি কথা বলে ফেলে।সেই কারনে আজও অনেকে অতি প্রিয় হলেও মেয়েদের কাছে গোপন কথা বলে না।


দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা অনুচিত কেন? 

দাড়িয়ে প্রস্রাব করলে আমাদের জননেন্দ্রিয়ে চাপ পড়ে কারণ প্রস্রাব যাতে গায়ে না আসে তাকে শরীর থেকে দূরে ফেলার জন্য বেগের শক্তি বাড়াতে হয় তাতে ইন্দ্রিয়ের শক্তি কমে যায়।তাছাড়া দাড়িয়ে প্রস্রাব করলে বহু দিকে ছড়িয়ে যায় এবং জায়গাটিকে দূষিত করে দেয় তাই দাঁড়িয়ে প্রস্রাব নিষিদ্ধ উচিৎ  নয়।


মন্দিরের মাথায় ত্রিশূল থাকে কেন?

প্রায় দেখা যায় মন্দিরের মাথায় একটি করে ত্রিশূল শক্ত করে প্রোথিত করা রয়েছে। এটাকে ধর্মীয় কারণ বলে মনে করলেও এর কিন্তু বৈজ্ঞানিক কারণ আছে।এই ত্রিশূলের  ফলাগুলি বজ্র নিরোধকের কাজ করে।  ত্রিশূলের শেষপ্রান্ত তারের সাহায্যে মাটির গভীরে পোঁতা থাকে। এখন অনেক বড় বড় বাড়ির ছাদের উপরে ত্রিশূল এর আকারের রড বসানো থাকে। একে বলা হয় লাইটনিং এরেস্টার। এগুলি আকাশের বিদ্যুৎকে বাধা সৃষ্টি করে।তাই বজ্রপাত হয় না।অনুরূপভাবে মন্দিরের উপরের ত্রিশূল বজ্রপাতে বাধা দেয়। তাই সুন্দর সুন্দর বড় বড় মন্দির গুলি বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পায়। অতএব বোঝা যাচ্ছে প্রাচীনকালেও বিজ্ঞানের অগ্রগতি ছিল।


গয়াতে পিন্ডদান কল্যাণকর কেন?

হিন্দুদের পরম তীর্থক্ষেত্র গয়াধাম। স্বয়ং ভগবান রামচন্দ্রে শ্রীধাম গয়াতে গিয়ে পিতার পিণ্ড দিয়েছিলেন। তার প্রমাণস্বরূপ ফল্গু নদী,অক্ষয়বট আর শ্রীবিষ্ণুর পাদপদ্ম। পিতা-মাতার বাৎসরিক কর্মের পর পিন্ডদান না করলে প্রেতাত্মার মুক্তি হয় না।এতে অবশ্য বৈজ্ঞানিক কোন যুক্তি নেই কিন্তু আজও লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ গয়াতে পিন্ড দান করেন।একে কুসংস্কার বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।স্বয়ং শ্রীচৈতন্যদেব পিতার পিন্ডদান গয়াতে সম্পন্ন করেন। সুতরাং তিনি যখন কুসংস্কার বলে মনে করেননি অতএব এটা কুসংস্কার নয়।এটা মানা একান্ত কর্তব্য। শাস্ত্রের অনুশাসনের সাথে এই জাগতিক জড় বিজ্ঞানের কোন মিল থাকতে পারে না। শাস্ত্রের অনুশাসন মেনে চলা একান্ত কর্তব্য তাই গয়াতে পিন্ডদান আজও প্রচলিত আছে।


এখন অনেকেই মূর্খের মত বলে থাকে ধর্ম-কর্ম করে কি হবে?ওসব বৃদ্ধ বয়সে করবো। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে সেই ব্যক্তিকি হলফ করে বলতে পারবে যে, সে একদিন বৃদ্ধ হবেই।হয়ত তাকে যুবক বয়সে মৃত্যু মুখে পতিত হতে পারে। আমরা জন্মের পূর্বে মায়ের গর্ভ থেকে প্রতিজ্ঞা করেছি যে ধরায় গিয়ে ধর্ম-কর্ম করব। অতএব কে কখন মরে যাব কেউ বলতে পারিনা। তাই আমাদের সব সময় ধর্মের পথে তথা সত্যের পথে চলা উচিত এবং সমাজের সমস্ত অনুশাসন এবং কর্তব্য মেনেছ চলা  উচিত।



ধন্যবাদ : indianmythologyrk.blogspot.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ